ভারত বিভাজন (১৯৪৭) কি অনিবার্য ছিল?

Reading Time: 1 minute

ভূমিকা : ১৭৫৭ সালে পলাশির যুদ্ধের জয়ের মাধ্যমে ইংরেজরা যে শাসন প্রতিষ্ঠা করে ভারতবাসী ছিল এর বিরুদ্ধে। তখন থেকে চলমান নানা সাংবিধানিক ও সশস্ত্র আন্দোলনের মুখে ব্রিটিশ শাসন নড়বড়ে হয়ে উঠেছিল। তাই বলা যায় ভারত বিভাজন এক প্রকার অনিবার্যই হয়ে উঠেছিল ।

১৯৪৭ সালের ভারত বিভাজন অপরিহার্য ছিল কি না: নিম্নে পর্যায়গুলোর আলোকে ১৯৪৭ সালের ভারত বিভক্তি যে অনিবার্য ছিল বর্ণনা করা হলো :

১. ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহ : ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহ ছিল ভারতীয়দের ব্রিটিশবিরোধী প্রথম জাতীয়তাবাদী সশস্ত্র আন্দোলন। এর প্রেক্ষিতে ইংরেজরা ভারতে নিজেদের ভারতবর্ষে ব্রিটিশ অবস্থান সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠে।

২. সংগঠিত রাজনৈতিক আন্দোলন : ১৮৮৬ সালের ভারতীয় শাসন এর অ জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা, সৈয়দ আহমদের আলীগড় আন্দোলন, ১৯০৬ সালের মুসলিম লীগ গঠন প্রভৃতি ছিল ভারতীয় সুপারিশ করে উপমহাদেশে ইংরেজ শাসনবিরোধী গঠনমূলক রাজনৈতিক আন্দোলন। হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ই সংঘবদ্ধভাবে ব্রিটিশ সরকারের নানা বিষয়ে প্রতিবাদ জানায় যা ব্রিটিশ সরকারকে তার অস্তিত্ব সম্পর্কে ভাবিয়ে তুলে ।

৩. স্বদেশী ও অসহযোগ আন্দোলন : ১৯০৫ সালের বঙ্গবঙ্গের বিরোধিতায় স্বদেশী আন্দোলন এবং ১৯১৯ সালের রাওলাট অ্যাক্টের | করতেন। ব বিরোধিতায় অসহযোগী আন্দোলন গড়ে ওঠে। তদুপরি খেলাফত থেকেই অ আন্দোলন, আইন অমান্য আন্দোলন ভারত ছাড় আন্দোলনের মতো বিরুদ্ধে অ সশস্ত্র আন্দোলনের মাধ্যমে ভারতবাসী ইংরেজ শাসনের প্রতি সালে যে তাদের তীব্র অনীহা প্রকাশ করে। এসব আন্দোলনের মুখে ব্রিটিশ | প্রতিষ্ঠার সরকার নিজের অস্তিত্ব সম্পর্কে প্রমাদ গুণে ।

৪. ১৯৩৭ সালের নির্বাচন ও লাহোর প্রস্তাব : ১৯৩৭ সালের প্রথম প্রদেশগুলোতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তদুপরি ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবে প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনে জোর দাবি উঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসনের দাবির ক্ষেত্রে আড়ালে ভারতীয় স্বাধীনতার দাবি প্রস্ফুটিত হয়ে উঠে ।

৫. ব্রিটিশ সরকারের বিভিন্ন সংস্কার আইন : ১৮৫৮ সালের ভারত শাসন আইন, ১৮৬১ ও ১৮৯২ সালের ভারতীয় কাউন্সিল আইন, ১৯০৯ ও ১৯১৯ সালের সংস্কার আইন, ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন প্রভৃতি আইনের ধারাবাহিকত।ই ছিল ১৯৪৭ সালের ‘ভারত স্বাধীনতা আইন ।

৬. ১৯৪৬ সালের নির্বাচন ও বিভিন্ন পরিকল্পনা : ১৯৪৬ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনের মাধ্যমে হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের জন্য আলাদা স্বতন্ত্র ভূখণ্ডের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়। তদুপরি, ১৯৩৯ সালের জিন্নাহর দ্বি-জাতি তত্ত্ব, মন্ত্রিমিশন পরিকল্পনা ও মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনার মাধ্যমে বিভক্তি সুস্পষ্ট হয়।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ইংরেজ শাসন পত্তনের সময় থেকেই ভারতবাসীর মনে যে বিরোধিতা দেখা দেয় তা পরে চরম রূপ লাভ করে। এই বিরোধিতা এবং হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার কথা মাথায় রেখেই লর্ড মাউন্টব্যাটেন ৩ জুন ১৯৪৭ সালে একটি পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। এই পরিকল্পনার আলোকেই ১৮ জুলাই ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ভারত স্বাধীনতা আইন পাস হয়। এই আইনের আলোকে ১৪ আগস্ট পাকিস্তান এবং ১৫ আগস্ট ভারত স্বাধীন হয়। তাই প্রেক্ষাপট আলোচনা সাপেক্ষে বলা যায় ১৯৪৭ সালের ভারত বিভক্তি ছিল অপরিহার্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

The National University of Bangladesh's all-books and notice portal, nulibrary.com, offers all different sorts of news/notice updates.

You may find almost every type of National University information here, including NU news, NU admissions information, NU results, and NU exam schedules.
Our goal is to aid NU students by offering information.
© Copyright 2022 - aowlad - All Rights Reserved
magnifierchevron-down linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram