nulibrary

উষ্ণ জলনীতি বলতে কী বুঝায়?

Reading Time: 1 minute

ভূমিকা : উষ্ণ জলনীতি (Warm water policy) হচ্ছে জার পিটার দি গ্রেট কর্তৃক গৃহীত পররাষ্ট্রনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। পিটার যখন রাশিয়ার জার পদ লাভ করেন তখন রুশ জাতি ছিল অর্ধ অসভ্য এবং ইউরোপীয় সভ্যতার প্রভাব হতে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। বরফাবৃত শ্বেতসাগর ভিন্ন বাল্টিক বা কৃষ্ণসাগরের পথে পশ্চিম ইউরোপের সাথে রাশিয়ার কোনো যোগাযোগ তখন ছিল না। রুশ রাষ্ট্রকে ইউরোপীয় রাজনীতিতে মর্যাদাপূর্ণ স্থানদানের জন্য এবং কৃষ্ণসাগর ও বাল্টিক সাগরের পথে ইউরোপের সাথে যোগাযোগ স্থাপনে বদ্ধপরিকর হয়ে পিটার উষ্ণ জলনীতি গ্রহণ করেন ।

এ উষ্ণ জলনীতি গ্রহণের উদ্দেশ্য : পিটার দি গ্রেটের ক্ষমতা লাভের সময় রাশিয়া ছিল সর্বদিক দিয়ে অনগ্রসর। রাশিয়াকে ইউরোপীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে এক মর্যাদাপূর্ণ শক্তিতে পরিণত করার লক্ষ্যে পিটার উষ্ণ জলনীতি গ্রহণ করেন। কেননা, শ্বেতসাগর তীরে অবস্থিত আর্চেঞ্জেল বন্দর ভিন্ন অপর কোনো পথে রাশিয়ার পক্ষে সমুদ্রে পৌঁছানো সম্ভব ছিল না। কিন্তু শ্বেতসাগর বছরের নয় মাসই বরফে ঢাকা থাকত।

→ উষ্ণ জলনীতি নামকরণের কারণ : শ্বেতসাগর বছরের নয় মাসই বরফাবৃত থাকত। শ্বেতসাগর অপেক্ষা বাল্টিক ও কৃষ্ণসাগরের জল ছিল উষ্ণ। যেহেতু পিটার বাল্টিক ও কৃষ্ণসাগরের পথে ইউরোপের সাথে যোগাযোগ করার পরিকল্পনা করেন সেহেতু তিনি এর নামকরণ করেন উষ্ণ জলনীতি।

→ উষ্ণ জলনীতির বাস্তবায়ন : পিটার উষ্ণ জলনীতি বাস্ত বায়নের অগ্রসর হন। এ সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো :
১. আজফ বন্দর দখল : তুর্কি সাম্রাজ্যের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে পিটার কৃষ্ণসাগরের উপকূলের আজফ নামক বন্দরটি ১৬৯৬ সালে দখল করেন। বসফরাস ও দর্দানেলিস প্রণালির ওপর তুর্কি প্রাধান্য থাকায় আজফ বন্দর দখল তেমন একটা উপকারে আসেনি |

২. নার্ভার যুদ্ধে পরাজয় : ১৬৯৭ সালে সুইডেনের সিংহাসনে দ্বাদশ চার্লস আরোহণ করলে পিটার ডেনমার্ক ও পোল্যান্ডের সাথে সম্মিলিতভাবে সুইডেন আক্রমণ করে সাম্রাজ্য ভাগ করে নেওয়ার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু ১৭০০ সালে সংঘটিত নার্ভার যুদ্ধে বাদশ চার্লসের কাছে তিনি শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন ।

৩. কেরেলিয়া ও ইংরিয়া বন্দর দখল : পিটার পরাজিত হলেও দ্বাদশ চার্লসের অদূরদর্শিতার সুযোগে তিনি পুনরায় শক্তি সঞ্চয় করে বাল্টিক উপকূলে উপস্থিত হন। দ্বাদশ চার্লস এসময় পোল্যান্ড ও স্যাক্সনিদের দমনে কালক্ষেপণ করলে পিটার কেরেলিয়া ও ইংরিয়া নামক দুটি বাল্টিক সাগরের বন্দর দখল করেন।

৪. পোল্টাভার যুদ্ধ : ১৭০৯ সালে দ্বাদশ চার্লস মস্কো নগরী আক্রমণ করতে গিয়ে ব্যর্থ হন। ফেরার পথে পোল্টাভার যুদ্ধে পিটারের নিকট সম্পূর্ণভাবে পরাজিত হন। এর ফলে বাল্টিক সাগরে সুইডেনের স্থলে রাশিয়ার প্রাধান্য স্থাপিত হয়।

৫. প্রুথের সন্ধি : পোল্টাভার যুদ্ধে পরাজিত হয়ে দ্বাদশ চার্লস তুরস্কে আশ্রয় গ্রহণ করেন এবং তুর্কি সুলতানের সাহায্য প্রার্থনা করেন। একই সাথে সুইডেন ও তুরস্কের মিলিত বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করা সমীচীন হবে না মনে করে পিটার ১৭১১ সালে প্রুথের সন্ধি করেন।

৬. নিস্ট্যাডাট -এর সন্ধি : দ্বাদশ চার্লসের মৃত্যুর পর পিটা দি গ্রেট ১৭২১ সালে নিস্ট্যাডাট এর সন্ধি করেন। এ সন্ধি অনুসারে পিটার সুইডেনের নিকট হতে এন্থোনিয়া, কেরেলিয়া, লিভোনিয়া, ইংরিয়া প্রভৃতি লাভ করেন।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, পিটার কর্তৃক গৃহীত উচ্চ জলনীতি রাশিয়াকে ইউরোপীয় রাজনীতিতে মর্যাদাপূর্ণ স্থান দান করে। উত্তর ইউরোপে সুইডেনের প্রাধান্য বিনষ্ট হয়ে রাশিয়ার প্রাধান্য স্থাপিত হয়। পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ কালে রাশিয়া কোন পথে অগ্রসর হবে সে ইঙ্গিত পিটার তার উষ্ণ জলনীতির মধ্যেই রেখে গিয়েছিলেন।

The National University of Bangladesh's all-books and notice portal, nulibrary.com, offers all different sorts of news/notice updates.
© Copyright 2024 - aowlad - All Rights Reserved
magnifier linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram