১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের ফলাফল কি ছিল?

Reading Time: 1 minute

অথবা, ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের ফলাফল কি ছিল?

অথবা, সিপাহী বিদ্রোহের ফলাফল সংক্ষেপে আলোচনা কর ৷

ভূমিকা : ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে British East india company-র বিরুদ্ধে সংঘটিত ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহ প্রথম স্বাধীনতা আন্দোলন। এ বিদ্রোহ ছিল পলাশীর যুদ্ধের পরবর্তী একশ বছরের ব্রিটিশ শাসন ও শোষণের চরম পরিণতি। ১৮৫৭ সালের এ বিদ্রোহ কোম্পানির সেনাদের মধ্যে শুরু হয়ে তা ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ছাড়িয়ে পড়ে। এ বিদ্রোহ কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন করতে না পারলেও জাতীয় চেতনাকে জাগ্রত করেছিল সফলভাবে।

→ বিদ্রোহের গুরুত্ব বা ফলাফল : নিচে সিপাহী বিদ্রোহের ফলাফল আলোচনা করা হলো :

১. অনুপ্রেরণার উৎস : ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহ ব্যর্থ হলেও রক্তের বিনিময়ে ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্যে একটি প্রেরণার উৎস হয়ে রয়েছে এবং আজীবন ইতিহাসের পাতায় চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

২. কোম্পানি শাসনের অবসান : এ বিদ্রোহের ফলে ব্রিটিশ শাসননীতির ব্যাপক পরিবর্তন হয়। মহারাণী ভিক্টোরিয়া এক ঘোষণার দ্বারা বাংলা ও ভারত ব্রিটিশের প্রত্যক্ষ শাসনাধীনে আনয়ন করেন। এভাবে কোম্পানির শাসনব্যবস্থা বিলুপ্ত হয়ে প্রত্যক্ষভাবে ব্রিটিশ শাসনব্যবস্থা চালু হয় ।

৩. ভারতবাসীর প্রতি ঘোষণা : মহারাণীর ঘোষণাপত্রে এটি ঘোষণা করা হয় যে, একমাত্র ব্রিটিশ নাগরিক ও প্রজাদের হত্যাকাণ্ডের সাথে প্রত্যক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ভিন্ন অপর সকলকে শাস্তি প্রদান হতে নিষ্কৃতি দেয়া হবে এবং জাতি ধর্ম নির্বিশেষে গুণানুযায়ী ভারতবাসীকে উচ্চরাজকার্যে নিযুক্ত করা হবে।

৪. সাম্রাজ্যবাদী বিভেদনীতি : ব্রিটিশ শাসনের নিরাপত্তা বিধানের উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ সাম্রাজ্যবাদী বিভেদ নীতি অবলম্বন করে। এ নীতির ফলেই পরবর্তীকালে সাম্প্রদায়িক মনোভাব মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।

৫. সামরিক সংস্কার : সামরিক বিভাগকে নতুন করে গঠন করা হলো। বিভাগ ও বিভেদ নীতি অবলম্বন করে প্রেসিডেন্সি সেনাবাহিনীকে পৃথক করে রাখা হলো। ইউরোপীয় সেনাসংখ্যা বৃদ্ধি করা হলো। অভ্যন্তরীণ শান্তিরক্ষার ভার ইউরোপীয় সামরিক কর্মচারীদের উপর অর্পণ করা হলো।

৬. শাসনতন্ত্র পরিবর্তন : বিদ্রোহের ফলে ১৮৫১ সালে কাউন্সিল এ্যাক্ট পাস করে বোম্বাই ও মাদ্রাজ কাউন্সিলের আইন প্রণয়ন ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহে সিপাহীরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল বটে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটা ছিল সর্বস্তরের জনগণের সম্মিলিত স্বাধীনতা। ইংরেজদের বিরুদ্ধে এটাই ছিল ভারতীয় জনগণের ব্যাপক সংগ্রাম ও স্বাধীনতা লাভের চরম প্রচেষ্টা। ড. কোরায়েশী ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহকে “আজাদির সংগ্রাম” বলে আখ্যায়িত করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

The National University of Bangladesh's all-books and notice portal, nulibrary.com, offers all different sorts of news/notice updates.

You may find almost every type of National University information here, including NU news, NU admissions information, NU results, and NU exam schedules.
Our goal is to aid NU students by offering information.
© Copyright 2022 - aowlad - All Rights Reserved
magnifierchevron-down linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram