nulibrary

লুজান চুক্তির পটভূমি ব্যাখ্যা কর । এই চুক্তি কি সেভার্স চুক্তি দ্বারা সৃষ্ট অসঙ্গতিগুলো দূর করতে সমর্থ হয়েছিল?

Reading Time: 1 minute

ভূমিকা : অটোমান সালতানাত ১২৮৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর দীর্ঘ ৬ শতাব্দী ব্যাপী ৩ মহাদেশ জুড়ে সাম্রাজ্য পরিচালনা করে। কিন্তু অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে সুলতানদের বিলাসিতা, স্বেচ্ছাচারিতার কারণে অটোমান সালতানাত দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ইউরোপীয় ব্যক্তিবর্গ চতুর্দিক থেকে সালতানাতকে চেপে ধরে। ১৯১৪ সালের প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অক্ষ শক্তির পরাজয়ের পর যুদ্ধের যাবতীয় দায় তুরস্কের উপর চাপিয়ে মিত্রশক্তিবর্গ অটোমান সুলতানকে অর্থনৈতিক, ভৌগোলিক ও সামরিক দিক থেকে পঙ্গু করে দেয়ার জন্য অপমানজনক সেভার্স চুক্তি চাপিয়ে দেয়। কিন্তু এলন। এ সময় মোস্তফা কামালের নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী শক্তি এই লত চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে নতুন লড়াই শুরু করলে মিত্র শক্তিবর্গ রে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেই তুরস্কের সাথে যে নতুন চুক্তি স্বাক্ষর শবে করে তা হলো লুজান চুক্তি। এই চুক্তি ছিল তুরস্কের জন্য যথেষ্ট নদী সম্মানজনক ও সেভার্স চুক্তির ক্ষতিপূরণস্বরূপ।

নিম্নে প্রশ্নালোকে যার লুজান চুক্তির পটভূমি ও এই চুক্তির ফলে সেভার্স চুক্তির দুর্বলতা এর দূরীকরণ বিষয়ে আলোচনা করা হলো :

১. লুজান চুক্তির পটভূমি : প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অব্যাবহিত পরে গান | মিত্রশক্তি তুরস্ক ও জার্মানিকে অর্থনৈতিক, সামরিক ও ভৌগোলিক দিক দিয়ে পঙ্গু করে দেয়ার জন্য যে কয়েকটি দ্ধে ন্যাক্কারজনক চুক্তি করে সেভার্স চুক্তি তন্মধ্যে অন্যতম। এই পর চুক্তির মাধ্যমে বিশাল অটোমান সালতানাতকে খণ্ড বিখণ্ড করে ফেলা হয়েছিল । তাছাড়া সামরিক ও আর্থিক দিক দিয়ে পঙ্গু করে ফেলার জন্য বিভিন্ন লজ্জাজনক শর্ত চাপিয়ে দিয়েছিল। তাই এইসেভার্স চুক্তির বিরুদ্ধে মোস্তফা কামাল জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ত্ব ঐক্যবদ্ধ করে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়ে বেশকিছু হারানো অঞ্চল পুনরুদ্ধারে সফল হন। ফলে শান্তির স্বার্থে এই সময় মিত্রবাহিনী নতুন বাস্তবতায় তুরস্কের সাথে নতুন একটি চুক্তির 7 প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। এই লক্ষ্যে ১৯২২ সালে সুইজারল্যান্ডের লুজান শহরে দুই পক্ষের মধ্যে সম্মেলন শুরু হয়। সম্মেলনে তুরস্কের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন ইসমত ইনুন। তিনি তার জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতার দ্বারা লজ্জাজনক সেভার্স চুক্তির অসারতা তুলে ধরেন। মিত্রশক্তির পাল্টা যুক্তিতর্কও তিনি খণ্ডন করেন। এ সময় তিনি মিত্রশক্তির প্রতিনিধিবৃন্দের পারস্পরিক দ্বন্দ্ব্ব ও তাদের বলশেভিক ভীতিকে ও তুরস্কের অনুকুলে নিয়ে আসতে সক্ষম হন। দীর্ঘ বিতর্ক শেষে ১৯২৩ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি অমীমাংসিতভাবে এই সম্মেলন মূলতুবি হয়ে যায়। ২৩ এপ্রিল সম্মেলন নতুন করে শুরু হলে ইসমত ইনুনু নতুন সম্মানজনক চুক্তির বিষয়ে জোরালো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। ৩ মাসের দীর্ঘ আলোচনা শেষে অবশেষে তুরস্ক সরকার ও মিত্র শক্তিবর্গ ১৯২৩ সালের ২৪ জুলাই ঐতিহাসিক লুজান চুক্তিতে সম্মত হয়। লুজান চুক্তির ধারা ছিল মোট ১৪৩টি। এই চুক্তির প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল তুরস্কের রাজনৈতিক ভূখণ্ডগত সীমানা, সার্বভৌমত্ব ও সামরিক বিষয়াবলির সম্মানজনক সমাধান। এই চুক্তির ফলে তুরস্ক তার হৃত সার্বভৌমত্ব ফিরে পায় এবং তুরস্কের সীমানা নতুন করে নির্ধারণ করা হয়। এর ফলে তুরস্ক তার হারানো বেশকিছু অঞ্চলের মালিকানা লাভ করে বিনিময়ে তাকে ও কিছু কিছু অঞ্চলে ছাড় দিতে হয়েছিল। তুরস্কে দীর্ঘদিনের প্রচলিত ক্যাপিচুলেশন প্রথা বিলুপ্ত করা হয় । সর্বোপরি ১৯১৭ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের ফলে অটোমান সালতানাতের উপর যে সকল অন্যায় ও অসম্মানজনক চুক্তি চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল তা ১৯২৩ সালের এই লুজান চুক্তির মাধ্যমে কিছু সংশোধন করে তুরস্কের হারানো গৌরব ফিরিয়ে দেয়া হয়েছিল ।

২.সেভার্স চুক্তি: প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তুরস্কের পরাজয়ের পর মিত্রশক্তি তুরস্ককে সার্বিকভাবে পঙ্গু করে দেয়ার একটি চুক্তি | দোদেব চাপিয়ে দেয়। এখানে তুরস্কের সাথে কোনো আলোচনাই করা | সম্মানা= হয়নি, যুদ্ধকালীন গোপন চুক্তিগুলো বাস্তবায়নে প্যারিস, লন্ডন ও স্যান রেমো সম্মেলনে আলোচনার পর ১৯২০ সালের ১০ আগস্ট | আলেব মিত্র শক্তি ও তুরস্কের মধ্যে সেভার্স চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে ম্যান্ডে একটি প্রস্তাবনা এবং ৪৩৩টি ধারা ছিল। চুক্তির ১-২৬ নং ধারায় নিয়ন্ত্রি লীগ অব নেশন্সের কডেনান্টি সংযোজিত হয়েছে। চুক্তির ২৭-৩৫নং ধারায় তুরস্কের ভূখণ্ড। ৩৬-১৩৯ নং ধারায় রাজনৈতিক নেশে বিষয়াবলি যেখানে তুর্কি অধিকৃত বিভিন্ন অঞ্চলে তুরস্কের অধিকার ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে। চুক্তির ১৪০-১৫১ পর্যন্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার ও নিরাপত্তা বিধান। ১৫১-২০৭ নং ধারায় সেনা নৌ ও বিমান বাহিনীর এখতিয়ার বর্ণনা করা হয়েছে। এছাড়াও এই চুক্তিতে যুদ্ধবন্ধীদের বিচার ক্যাপিচুলেশন ও আকাশ পথ ব্যবহার, জল স্থল ও রেলপথ ব্যবহারের এখতিয়ার বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এই চুক্তির মাধ্যমে মূলত মিত্র শক্তিবর্গ শক্তিশালী অটোমান সালতানাতকে অর্থনৈতিক রাজনৈতিক ভৌগোলিক ও সামরিক দিক থেকে একেবারে পঙ্গু করে দিয়েছিল।

৩. সেভার্স চুক্তির দুর্বলতা দূরীকরণে লুজান চুক্তি : সেভার্স এই চুক্তির মাধ্যমে অপমানজনকভাবে তুরস্ককে যেভাবে কোণঠাসা কর করে ফেলা হয়েছিল লুজান চুক্তির মাধ্যমে তার কিছুটা পরিত্রাণ তা দেয়া হয়েছিল । যেমন :

(ক) রাজনৈতিক ধারা : চুক্তির ধারা মোতাবেক তুরস্ক কে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য, জাপান, ইতালি, রুমানিয়া, গ্রিস ইত্যাদি রাষ্ট্রের যুদ্ধ সাথে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবে। এই চুক্তিতে বা আনাতোলিয়াসহ তুর্কি অধ্যুষিত অঞ্চলসমূহের ভূখণ্ডগত ঐক্যের ব্য স্বীকৃতি দেয়া হয়। আর তুরস্ক ও আরব অঞ্চলসমূহের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব মেনে নেয়।

(খ) ভূখণ্ডগত ধারাসমূহ : সেভার্স চুক্তির অপমানজনক ভূখণ্ডগত ধারাসমূহ সংশোধন করে লুজান চুক্তিতে কৃষ্ণসাগর ও ইজিয়ান সাগর পর্যন্ত অঞ্চলে তুরস্কের সঙ্গে বুলগেরিয়া ও গ্রিসের সীমানা, ও ভূমধ্যসাগর থেকে পারস্য পর্যন্ত তুরস্কের সঙ্গে সিরিয়া ও ইরাকের সীমানা নির্ধারিত হয় এবং তা মানচিত্রে যথাযথভাবে নির্দেশ করে দেয়া হয়। তাছাড়া গ্রিসের সাথে সীমানা নির্দেশ পিলারগুলো যাতে দুই দেশ থেকে দৃশ্যমান হয় সে ব্যবস্থা গ্রহণ ও গ্রথিত পিলারের সংখ্যা ও অবস্থান মানচিত্রে চিহ্নিত করার কথা হয় ।

(গ) মালিকানাগত ধারা : এই চুক্তির ফলে মারিসা নদী ও এর পশ্চিম তীরস্থ কারাগার শহর পর্যন্ত সমগ্র পূর্ব থ্রেসের উপর পুনরায় তুরস্কের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়। ইমব্রস ও তেনেদস দ্বীপ দুটিও তুরস্ক পায়, বিনিময়ে ইজিয়ান সাগরের অন্যান্য দ্বীপের সেভার্স চুক্তি: প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তুরস্কের পরাজয়ের পর মিত্রশক্তি তুরস্ককে সার্বিকভাবে পঙ্গু করে দেয়ার একটি চুক্তি | দোদেব চাপিয়ে দেয়। এখানে তুরস্কের সাথে কোনো আলোচনাই করা | সম্মানা= হয়নি, যুদ্ধকালীন গোপন চুক্তিগুলো বাস্তবায়নে প্যারিস, লন্ডন ও স্যান রেমো সম্মেলনে আলোচনার পর ১৯২০ সালের ১০ আগস্ট | আলেব মিত্র শক্তি ও তুরস্কের মধ্যে সেভার্স চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে ম্যান্ডে একটি প্রস্তাবনা এবং ৪৩৩টি ধারা ছিল। চুক্তির ১-২৬ নং ধারায় নিয়ন্ত্রি লীগ অব নেশন্সের কডেনান্টি সংযোজিত হয়েছে। চুক্তির ২৭-৩৫নং ধারায় তুরস্কের ভূখণ্ড। ৩৬-১৩৯ নং ধারায় রাজনৈতিক নেশে বিষয়াবলি যেখানে তুর্কি অধিকৃত বিভিন্ন অঞ্চলে তুরস্কের অধিকার ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে। চুক্তির ১৪০-১৫১ পর্যন্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার ও নিরাপত্তা বিধান। ১৫১-২০৭ নং ধারায় সেনা নৌ ও বিমান বাহিনীর এখতিয়ার বর্ণনা করা হয়েছে। এছাড়াও এই চুক্তিতে যুদ্ধবন্ধীদের বিচার ক্যাপিচুলেশন ও আকাশ পথ ব্যবহার, জল স্থল ও রেলপথ ব্যবহারের এখতিয়ার বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এই চুক্তির মাধ্যমে মূলত মিত্র শক্তিবর্গ শক্তিশালী অটোমান সালতানাতকে অর্থনৈতিক রাজনৈতিক ভৌগোলিক ও সামরিক দিক থেকে একেবারে পঙ্গু করে দিয়েছিল।

৩. সেভার্স চুক্তির দুর্বলতা দূরীকরণে লুজান চুক্তি : সেভার্স এই চুক্তির মাধ্যমে অপমানজনকভাবে তুরস্ককে যেভাবে কোণঠাসা কর করে ফেলা হয়েছিল লুজান চুক্তির মাধ্যমে তার কিছুটা পরিত্রাণ তা দেয়া হয়েছিল । যেমন :
(ক) রাজনৈতিক ধারা : চুক্তির ধারা মোতাবেক তুরস্ক | কে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য, জাপান, ইতালি, রুমানিয়া, গ্রিস ইত্যাদি রাষ্ট্রের যুদ্ধ সাথে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবে। এই চুক্তিতে বা আনাতোলিয়াসহ তুর্কি অধ্যুষিত অঞ্চলসমূহের ভূখণ্ডগত ঐক্যের ব্য স্বীকৃতি দেয়া হয়। আর তুরস্ক ও আরব অঞ্চলসমূহের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব মেনে নেয়।

(খ) ভূখণ্ডগত ধারাসমূহ : সেভার্স চুক্তির অপমানজনক ভূখণ্ডগত ধারাসমূহ সংশোধন করে লুজান চুক্তিতে কৃষ্ণসাগর ও ইজিয়ান সাগর পর্যন্ত অঞ্চলে তুরস্কের সঙ্গে বুলগেরিয়া ও গ্রিসের সীমানা, ও ভূমধ্যসাগর থেকে পারস্য পর্যন্ত তুরস্কের সঙ্গে সিরিয়া ও ইরাকের সীমানা নির্ধারিত হয় এবং তা মানচিত্রে যথাযথভাবে নির্দেশ করে দেয়া হয়। তাছাড়া গ্রিসের সাথে সীমানা নির্দেশ পিলারগুলো যাতে দুই দেশ থেকে দৃশ্যমান হয় সে ব্যবস্থা গ্রহণ ও গ্রথিত পিলারের সংখ্যা ও অবস্থান মানচিত্রে চিহ্নিত করার কথা হয় ।

(গ) মালিকানাগত ধারা : এই চুক্তির ফলে মারিসা নদী ও এর পশ্চিম তীরস্থ কারাগার শহর পর্যন্ত সমগ্র পূর্ব থ্রেসের উপর পুনরায় তুরস্কের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়। ইমব্রস ও তেনেদস দ্বীপ দুটিও তুরস্ক পায়, বিনিময়ে ইজিয়ান সাগরের অন্যান্য দ্বীপের
উপর গ্রিসের মালিকানা দেয়া হয় আর তুরস্ক ইতালির অনুকুলে সম্মানায় তুর্কি সার্বভৌমত্ব স্বীকৃত হয়। দোদেকানিজ দ্বীপপুঞ্জও ত্যাগ করে। আনাতোয়ার অংশ হিসেবে

(ঘ) সিরিয়া তুরস্ক সীমান্ত নির্ধারণ : এই চুক্তির ফলে আলেকজান্দ্রেত্তা জেলাটি সিরিয়ার অংশে পড়ে। আর ইরাকের ম্যান্ডেটরি শাসনের চুক্তির ফলে ভবিষ্যতে তুরস্কের সাথে ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রিত ইরাকের সীমানা নির্ধারণের কথা বলা হয়।

(ঙ) নাগরিকত্ব সার্বভৌমত্ব ধারা : এই চুক্তির ফলে তুরস্ক মিশর ও সুদানের নিয়ন্ত্রণ ত্যাগ করে। তাছাড়া সাইপ্রাসের উপর ও ব্রিটিশ কর্তৃত্ব স্বীকার করে নেয়। আর সাইপ্রাসে বসবাসরত তুর্কিরা ব্রিটিশ নাগরিকত্ব লাভ করবে। তবে চুক্তির ২ বছর পর্যন্ত তারা তুর্কি নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবে আর তা যদি গৃহীত হয় তবে ১ বছরের মধ্যে তাকে তুরস্কে ফিরে আসতে হবে। তুরস্ক থেকে বিচ্ছিন্নকৃত অঞ্চলের নাগরিকদের জন্যও উক্ত খাত কার্যকর থাকবে। চুক্তিতে আর্মেনিয়া রাষ্ট্র গঠন ও কুর্দিস্তান বিষয়ে এড়িয়ে যাওয়া হয় ।

(চ) সার্বভৌমত্ব সংক্রান্ত ধারাসমূহ : সেভার্স চুক্তির তুলনায় এই চুক্তিতে তুরস্কের সার্বভৌমত্বের প্রতি বেশি সম্মান প্রদর্শন করা হয়। ক্যাপিচুলেশন প্রথা রাহিত করা হয়। বিনিময়ে তুরস্ক তার বিচারব্যবস্থায় নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক নিয়োগে রাজি হয় । মিত্র শক্তিসমূহ তুরস্কের উপর অর্থনৈতিক ক্ষতিপূরণের দাবি পরিত্যাগ করে। তুর্কি সেনা ও নৌ বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি ও আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম ক্রয়ের বিষয়ে যে নিষেধাজ্ঞা ছিল সেভার্স চুক্তিতে তা বাতিল করা হয় এই চুক্তির মাধ্যমে। তুরস্ক পুরনো মিল্লাত ব্যবস্থা বাতিলে সম্মত হয় ।

(ছ) জনসংখ্যা বিনিময় ধারা : তুর্কি ও গ্রিসের মধ্যে সম্পাদিত অন্য একটি চুক্তির মাধ্যমে তুর্কি অঞ্চলে বসবাসরত গ্রিক জনগোষ্ঠী আর গ্রিসের অংশে বসবাসরত তুর্কি নাগরিকদের দ্রুত নিজ দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। তবে কনস্ট্যান্টিনোপলে বসবাসরত গ্রিস আর থ্রেসে বসবাসরত তুর্কি নাগরিকগণ এই চুক্তির বাইরে থাকবে ।

জ) সার্বভৌমত্ব পরিপন্থি ধারা : লুজান চুক্তিতে পূর্বোক্ত সেভার্স চুক্তির তুলনায় তুরস্কের সার্বভৌমত্বের মর্যাদা দিলে ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্র প্রণালিগুলোর উপর আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়। অবশ্য চুক্তিতে বলা হয় লীগ অব নেশনসের তত্ত্বাবধানে একটি প্রণালি কমিশন গঠিত হবে যার সভাপতি হবে একজন তুর্কি নাগরিক, দাদানেলিস বসফরাস প্রণালির উভয় তীর এবং মর্মর সাগরস্থ দ্বীপসমূহে তুরস্ক সকল সামরিক তৎপরতা বন্ধ রাখবে। অবশ্য কনস্ট্যান্টিনোপল তুরস্ক ১২০০০ সৈন্য রাখার অধিকার পায় ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ১৯২৩ সালের ২৪ জুলাই সুইজারল্যান্ডের স্বাক্ষরিত লুজান চুক্তি তুরস্কের ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরাজয়ের ফলে বিজয়ী মিত্র শক্তির তুরস্কের উপর সেভার্স চুক্তির মতো একটি অপমানজনক চুক্তি চাপিয়ে দিয়েছিল। যার ফলে তুরস্কের ভৌগোলিক, অর্থনৈতিক, সামরিক ও রাজনৈতিক দিক দিয়ে একবারে কোণঠাসা করে ফেলা হয়েছিল। পরে মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদী শক্তি সেভার্স চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে নতুন ও আন্দোলন শুরু করলে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মিত্র শক্তি তুরস্কের সাথে অপেক্ষাকৃত উদারভাবে এই লুজান শক্তি স্বাক্ষর করে। এটি ছিল দুই পক্ষের মধ্যে একটি সমঝোতামূলক চুক্তি । এই চুক্তির ফলে তুরস্কের ন্যায্য দাবিসমূহ বাস্তবায়ন ও স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি প্রাপ্তি হয়েছিল। সামরিক, অর্থনৈতিক ও বিচারিক ক্ষেত্রেও তুরস্ক বৈদেশিক শক্তির নিয়ন্ত্রণ মুক্ত হয়। তাছাড়া এই চুক্তির ফলে মোস্তফা কামালের জাতীয়তাবাদী সরকার আন্তর্জাতিক শক্তিবর্গের ও সমর্থন লাভ করে।

The National University of Bangladesh's all-books and notice portal, nulibrary.com, offers all different sorts of news/notice updates.
© Copyright 2024 - aowlad - All Rights Reserved
magnifier linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram