১৯১৬ সালের লক্ষ্ণৌ চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত সাংবিধানিক দাবীসমূহ পর্যালোচনা কর।

Reading Time: 1 minute

ভূমিকা : ১৯১৬ সালের লক্ষ্মৌ চুক্তি কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ তথা হিন্দু মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠার এক অনবদ্য দলিল। ব্রিটিশ ভারতের রাজনৈতিক ও শাসনতান্ত্রিক ইতিহাসে ব্রিটিশ বিরোধী মনোভাবে বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় উভয় সম্প্রদায়ে । তাই লক্ষ্মৌ চুক্তি ভারতীয় হিন্দু মুসলিম উভয়ই সম্প্রদায়ের নিকট একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

→ সাংবিধানিক দাবিসমূহ : নিয়ে সাংবিধানিক দাবিসমূহ আলোচনা করা হলো :

১. স্বায়ত্তশাসন সরকারি ব্যবস্থা : লক্ষ্মৌ চুক্তি অনুসারে - বর্তমান সরকারি শাসনব্যবস্থা ভারতীয় জনগণের মৌলিক আশা- আকাঙ্ক্ষার । ব্যর্থ হয়েছে বিধায় ব্রিটিশ সরকারকে অনতিবিলম্বে ভারতে স্বায়ত্তশাসনের অধিকারসহ দায়িত্বশীল সরকারি ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে।

২. প্রাদেশিক আইনসভা : লক্ষ্মৌ চুক্তি অনুসারে বড় প্রদেশগুলোর আইনসভায় কমপক্ষে ১২৫ জন এবং ছোট প্রদেশগুলোর আইনসভায় ৫০-৭৬ জন সদস্য গ্রহণ এবং এর মধ্যে এক পঞ্চমাংশ মনোনীত এবং চার-পঞ্চমাংশ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার কথা বলা হয় ।

৩. পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা : কেন্দ্র ও প্রদেশে মুসলমানদের জন্য পৃথক নির্বাচকমণ্ডলীর ব্যবস্থা থাকবে এবং কেন্দ্র পৃথক নির্বাচনের ভিত্তিতে মুসলমানদের জন্য এক-তৃতীয়াংশ আসন বরাদ্দ থাকার কথা বলা হয়। এভাবে মুসলমানদের জন্য পৃথক নির্বাচন ও আসন সংরক্ষণের দাবি জানানো হয় ।

৫. প্রাদেশিক প্রশাসন : প্রদেশের প্রদান হিসেবে থাকবেন একজন গভর্নর এবং তিনি ভারতীয় সিভিল সার্ভিসের লোক না হলেও চলবে। প্রদেশে একটি শাসন পরিষদ থাকার কথা বলা - হয় যার অর্ধেক সদস্য ভারতীয় এবং তারা প্রাদেশিক নির্বাচিত • সদস্য ধারা নির্বাচিত হবেন ।

৬. গভর্নরের ক্ষমতা : গভর্নর জেনারেলের শাসন ক্ষমতা হ্রাস করার জন্য শাসন পরিষদের অর্ধেকের বেশি সদস্য ভারতীয়দের মধ্য থেকে নিযুক্ত হবেন এবং তারা কেন্দ্রীয় পরিষদের নির্বাচিত সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত হবেন যার মেয়াদকাল থাকবে ৫ বছর ।

৭. কেন্দ্রীয় আইন পরিষদ : রাজকীয় বা কেন্দ্রীয় আইন পরিষদের সদস্য ১৫০ জনে উন্নীত করার ব্যবস্থাসহ এদের এক- পঞ্চমাংশ মনোনীত এবং চার-পঞ্চমাংশ নির্বাচিত হবে। প্রাদেশিক পরিষদের নির্বচিত সদস্যদের দ্বারা কেন্দ্রীয় পরিষদের সদস্যরা নির্বাচিত হবে যার মেয়াদ হবে ৫ বছর ।

৮. সচিব ও পরিষদ : চুক্তি অনুসারে ভারত সচিবের ভারতীয় পরিষদের বিলুপ্তি করে তার সাহায্যর্থে একজন ভারতীয় সহকারে দুইজন সভার সচিব নিযুক্তির ব্যবস্থা করতে হবে তা বলা হয় ৷

৯. কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণ : প্রাদেশিক বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণ হ্রাস করার প্রস্তাব রাখা হয়। সেখানে অর্থ বিষয়ক সমগ্র দায়িত্ব প্রাদেশিক সরকারের উপর ন্যস্ত রাখার দাবি জানানো সহ প্রশাসন ও অর্থের ক্ষেত্রে প্রদেশগুলোকে যথাসম্ভ কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করার পরিকল্পনা করা হয়।

১০. বিভাগীয় স্বাধীনতা : একটি স্বাধীন হিসাব সংরক্ষণ ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা বলা হয় শুধুমাত্র সরকারের হিসাব সংরক্ষণের জন্য এবং প্রশাসন বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে পৃথক করে বিচার বিভাগের স্বাধীন ও নিরপেক্ষ করতে হবে।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, ব্রিটিশ ভারতের রাজনৈতিক ও শাসনতান্ত্রিক পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য হিন্দু মুসলিম সম্প্রদায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার মাধ্যমে ১৯১৬ সালে লক্ষ্মৌ চুক্তির সৃষ্টি করে। এতে করে উভয় সম্প্রদায়ের স্বায়ত্তশাসন ও দাবিদাওয়া প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ লাভ করা সহজ হয়ে পড়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

The National University of Bangladesh's all-books and notice portal, nulibrary.com, offers all different sorts of news/notice updates.

You may find almost every type of National University information here, including NU news, NU admissions information, NU results, and NU exam schedules.
Our goal is to aid NU students by offering information.
© Copyright 2022 - aowlad - All Rights Reserved
magnifierchevron-down linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram