ক্যাম্প ডেভিট চুক্তি কি?

Reading Time: 1 minute

অথবা, ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি বলতে কী বুঝ?

ভূমিকা : কিসিঞ্জারের কূটনৈতিক তৎপরতায় ১৯৭৪ ও ৭৫ সালে দু'দফায় মিশর ও ইসরাঈলের মধ্যে আলোচনার ফলে দু'দেশের সেনাবাহিনীর অবস্থানে কিছু পরিবর্তন আনা হয় । তবে সম্পূর্ণ সিনাই উপদ্বীপ থেকে ইসরাঈলী বাহিনীর অপসারণ ও মূল ফিলিস্তিন সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে কোন অগ্রগতি সাধিত না হওয়ায় সা'দাত অসহিষ্ণু হয়ে পড়েন।

১. ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি : প্রেসিডেন্ট সা'দাত মনে করেন যে, কোন নাটকীয় পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান হবে না। ১৯৭৭ সালে সা'দাত ইসরাঈল গমন করেন এবং নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় এ আলোচনা অব্যাহত থাকে। অবশেষে ১৯৭৮ সালে প্রেসিডেন্ট কার্টার দু'দেশের নেতৃবৃন্দকে প্রেসিডেন্টের অবকাশ ভবন ক্যাম্প ডেভিড আহ্বান করেন এবং ১৩ দিন একটানা আলোচনার পর ১৭ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন, মিশর ও ইসরাঈলের মধ্যে সমঝোতার দলিল স্বাক্ষরিত হয়। এটাই ইতিহাসে 'ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি' নামে পরিচিত।

২. চুক্তির মূল বিষয় : ক্যাম্প ডেভিড সমঝোতা মূলত দু'টি দলিল। প্রথম দলিলটি জর্দান প্রদীয় পশ্চিম তীর ও গাজা .এলাকার ভবিষ্যৎসহ ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান সম্পর্কিত এবং দ্বিতীয় দলিলটি মিশর ইসরাঈলের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সম্বন্ধীয় ।

৩. পশ্চিম তীর ও গাজা এলাকার ভবিষ্যৎ : পশ্চিম তীর ও গাজা এলাকায় পর্যায়ক্রমে ইসরাঈলী সামরিক ও বেসামরিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে ঘটিয়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে স্বায়ত্বশাসন প্রদান করা হবে বলে চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়। নির্বাচিত প্রতিনিধি পরিষদ ইসরাঈল ও জর্ডানের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরের পাঁচ বছরের মধ্যে এ দু’এলাকার ভবিষ্যৎ চূড়ান্তভাবে দূর করা হবে। আপাত দৃষ্টিতে আকর্ষণীয় মনে হলেও এ প্রস্তাবাবলি পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে যে, ইসরাঈলী দখলের অবসান না ঘটিয়ে নূতন রূপে এ দখল পাকাপোক্ত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে । যথা :
প্রথমত, স্বায়ত্বশাসনের অত্যন্ত সীমিত ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। সামাজিক ও পূর্ত বিভাগীয় কিছু কাজকর্ম করা ছাড়া রাজনৈতিক কোন ভূমিকা এ স্বায়ত্বশাসিত সংস্থাসমূহের থাকবে না ।
দ্বিতীয়ত, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব প্রধানত ইসরাঈলের ওপর ন্যস্ত থাকবে ।
তৃতীয়ত, বিশেষ বিশেষ এলাকায় ইসরাঈলী সৈন্য রাখারও ব্যবস্থা করা হয় ।

৪. মিশর-ইসরাঈল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক : মিশর-ইসরাঈল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষরের কথা বলা হয়। চুক্তি মোতাবেক সিনাই উপদ্বীপ থেকে দু'টি প্রধান পর্যায়ে ইসরাঈলী সৈন্য অপসারণের কথা বলা হয়। পর্যায়গুলোকে উপ- পর্যায়ে ভাগ করা হয় এবং সৈন্য অপসারণের নির্দিষ্ট সময়সূচি দেয়া হয়। প্রথম পর্যায়ে সৈন্য অপসারণের পর দু'দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের কথা বলা হয়। চুক্তিতে আরো বলা হয়, মিশর-ইসরাঈল চুক্তির সাথে মিশরের পূর্বতন চুক্তি সামঞ্জস্যপূর্ণ না হলে চুক্তি বা চুক্তিসমূহ বাতিল বলে গণ্য হবে ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি ইসরাঈলের অবৈধ দখলদারীত্বকে আরো পাকাপোক্ত করার ব্যবস্থা করেছে। এ চুক্তির পথ বেয়ে সম্পাদিত মিশর-ইসরাঈল চুক্তি একটি আত্মসমর্পণের দলিল হিসেবে আখ্যায়িত হয়ে আরব বিশ্বের নিন্দার পাত্রে পরিণত হয়েছে মিশর ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

The National University of Bangladesh's all-books and notice portal, nulibrary.com, offers all different sorts of news/notice updates.

You may find almost every type of National University information here, including NU news, NU admissions information, NU results, and NU exam schedules.
Our goal is to aid NU students by offering information.
© Copyright 2022 - aowlad - All Rights Reserved
magnifierchevron-down linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram